ঠাকুরগাঁও সুগার মিলের উৎপাদিত চিনি বিক্রি না হওয়ায় বিপাকে পড়েছে মিল কর্তৃপক্ষ। হাট-বাজারে ঘুরে ঘুরেও চিনি বিক্রি করতে পারছে না মিলটি। ফলে চাষিদের পাওনা পরিশোধ নিয়ে সষ্টি হয়েছে সমস্যা।
সুগার মিল সূত্রে জানা গেছে, ২০১১-১২ মওসুমে ৬৭ দিনে ৭৯ হাজার ৪৮৬ মে. টন আখ মাড়াই করে ৪ হাজার ৭৮৫ মে.টন চিনি উৎপাদন হয়। এর মধ্যে অবিক্রিত আছে ২৬ কোটি ১২ লাখ টাকা মূল্যের ৪ হাজার ৭৪৯ মে.টন চিনি।
চিনি বিক্রি না হওয়ায় আখ চাষিদের পাওনা পরিশোধ করতে হিমসিম খাচ্ছে ঠাচিক কর্তৃপক্ষ। চাষিদের পাওনা রয়েছে ৫০ লাখ টাকা। মঙ্গলবার সারা দিন ফেরি করে মাত্র ৩ বস্তা চিনি বিক্রি করেছে মিলটি।
গত বুধবার জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার কুশারীগাঁও গ্রামের ময়নুল হক ঠাকুরগাঁও চিনিকলে পাওনা টাকার জন্য মিলের অর্থ ব্যবস্থাপকের কার্যালয়ে বসে অপেক্ষা করছিলেন।
তিনি জানান, বোরো ক্ষেতে সেচ দেওয়ার জন্য ডিজেল কিনতে পারছেন না ময়নুল হক। সেচের অভাবে তার সবুজ ধানের ক্ষেত বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে।
তিনি ২০১১-১২ আখমাড়াই মওসুমে ১৮ বিঘা জমির আখ সরবরাহ করে এই চিনিকলে। মিলও বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় দেড়মাস আগে। কিন্তু তিনি এখনও আখের দাম পাননি। তার পাওনা ৩৪ হাজার টাকা।
ময়নুল আরও বলেন, তার গ্রামে দেড়শ চাষির আখের টাকা পাওনা রয়েছে। ভুক্তভোগী চাষিরা এখন পাওনা টাকার জন্য মিলে ধর্না দিচ্ছেন।
অর্থ ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তা সোলায়মান আলী জানান, দেশে প্রতিবছর প্রায় ১৫ লাখ মে.টন চিনির চাহিদা রয়েছে। এর বিপরীতে এবার ১৫ টি চিনিকল মাত্র ৭০ হাজার মে.টন চিনি উৎপাদন করতে পেরেছে। তাও বিক্রি হচ্ছে না।
নাম প্রকাশ করার না শর্তে সুগার কর্পোরেশনের একজন ডিলার জানান, বিদেশি পরিশোধিত চিনি বাজার দখল করায় দেশে উৎপাদিত চিনির চাহিদা কমেছে। তাই মিলের চিনি উত্তোলন করা হচ্ছে না।
মিলের সিবিএ নেতা নেতা পরিমল কান্তি দাস ও ওবায়দুল হক জানান, আর্থিক সঙ্কটের কারণে মিলের শ্রমিককর্মচারীদের মার্চ মাসের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।
ঠাকুরগাঁও চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিবেন্দ্র নাথ সরকার জানান, দোকানে দোকানে ফেরি করেও চিনি বিক্রি হচ্ছে না। অসম প্রতিযোগিতায় ঘুরপাক খেতে হচ্ছে। এ কারণে চাষিদের পাওনা পরিশোধ করা যাচ্ছে না।