স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, সুনির্দিষ্ট গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকলে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ডিআইজি মিজানকে গ্রেফতার করা হবে। আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশে (কেআইবি) মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী দিবসের অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়া সরকারি উচ্চপদস্থ কোনো কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করার সুযোগ নেই।
এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ডিআইজি মিজানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পরোয়ানা থাকলে তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করতে পারবেন।
আসাদুজ্জামান খান কামাল আরও বলেন, তার (ডিআইজি মিজান) বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, বিচারের পর তার কোনো শাস্তি হলে তা হবে। এখানে আমাদের আর কিছু করার নেই, আইনি প্রক্রিয়া তা চলবে। তবে ডিআইজি মিজান আত্মগোপনে বিদেশে চলে যেতে পারেন কিনা এমন প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কোনো মন্তব্য করেননি।
মাদকের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়াতে হবে এর আগে মাদকের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়াতে সর্বস্তরের জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, কোনো মাদক ব্যবসায়ীকে ছাড় দেওয়া হবে না। হয় তাকে আত্মসমর্পণ করতে হবে, না হয় তাদের কি পরিণতি হবে তারা সেটা ভালভাবেই জানেন। অবৈধ মাদক ব্যবসা, মাদক চোরাচালান আর দেশের মাটিতে করতে দেওয়া হবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদক কারবারীরা আত্মসমর্পণ করছে। যদি তারা স্বেচ্ছায় মাদক ব্যবসা না ছাড়ে, তাহলে তাদের ভবিষ্যৎ কী হবে, সৃষ্টিকর্তাই ভালো জানেন।
মাদক নির্মূল করতে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা মাদকের ডিমান্ড, সাপ্লাই রোধ করে এবং মাদকসেবীদের পুনর্বাসনের বিষয়ে সমানতালে কাজ করছি। মাদকের ডিমান্ড কমানোর ক্ষেত্রে আমরা সামাজিক আন্দোলন সৃষ্টি করার দিকে জোর দিচ্ছি। এ আন্দোলনে সর্বস্তরের জনগণকে যুক্ত করে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশ মাদক উৎপাদন করে না। তবে আমরা মাদকের রুট হিসেবে পরিচিত হয়ে গেছি। কেননা আমাদের চারপাশে সীমান্ত এলাকা আর এই সীমান্ত এলাকা দিয়েই ঢুকছে মাদক। আমাদের আইনশৃক্সখলা বাহিনী চেষ্টা করছে এগুলো রুট বন্ধ করে দিতে। আর যেন কেউ এই রুট ব্যবহার করে মাদক ঢুকাতে না পারে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর গত বছর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৭ হাজার ৮৯৮টি সভা আয়োজন করেছে। ২৮ হাজারেরও বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাদকবিরোধী কমিটি গঠন করা হয়েছে। মাদকের সাপ্লাই কমাতে বর্ডার এলকায় বিজিবি ও কোস্টগার্ডকে শক্তিশালী করা হয়েছে। এছাড়া আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে।
মাদকসেবীদের পুনর্বাসনের বিষয়ে তিনি বলেন, সরকারি মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে আসন বাড়ানো হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালেও মাদকাসক্তদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক জামাল উদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শামসুল হক টুকু, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা ও সেবা বিভাগের সচিব মো. শহিদুজ্জামান, ডা. অরূপ রতন চৌধুরী প্রমুখ।