পাবনার চাটমোহর উপজেলার মৎস্য অধিদপ্তরের ‘‘চিহ্নিত অবক্ষয়িত জলাশয় উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা এবং দেশী প্রজাতির ছোট মৎস্য সংরক্ষন প্রকল্পের’’ অধীন বাস্তবায়িত বিভিন্ন প্রকল্পের নানা অনিয়ম ও দূর্ণীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগে জানা গেছে, সম্প্রতি মৎস্য অধিদপ্তর চাটমোহর উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত বড়াল নদীকে চিহ্নিত অবক্ষয়িত জলাশয় হিসেবে আক্ষ্যায়িত করে কাগজে কলমে নদীকে জলাশয় বানিয়ে ৮টি প্রকল্পের অনুমোদন করে। এতে বরাদ্ধ দেয়া হয় ৬৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে গুনাইগাছা ইউনিয়নের মধ্যে ৩ টি প্রকল্প রয়েছে। প্রতিটি প্রকল্পে সুফ ভোগী ভূমিহীন সমিতি গঠন করে ১ জন দলনেতা নির্বাচন করা হয়। যাদের মাধ্যমে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হবার কথা।
কিন্তু বাস্তবে হয়েছে তার উল্টে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা মূলত: এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন। তারা ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদীর পাড় ভেঙ্গে নদীর মাঝ খান হতে সামান্য মাটি তুলে পুনরায় পাড় বেধে দিয়েছে। নদীর কোন প্রকার সীমানা নির্ধারন করা হয়নি। কোন রকমের মাটি কেটে মৎস্য কর্মকর্তাদের যোগসাজসে প্রকল্পের সাথে জড়িতরা সরকারি অর্থের হরিলুট করেছে। এই প্রকল্পের শুরুতেই বড়াল রক্ষা আন্দোলন কমিটির পক্ষ থেকে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। আদালত বড়াল নদীর প্রকল্পের উপর স্থিতিবস্থা প্রদান করেন। কিন্তু মৎস্য দপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, বড়াল নদীতে কোন বাঁধ হবে না, কোন ইজারা দেয়া হবে না মর্মে আদালতে হলফনামা দিয়ে স্থিতিবস্থা প্রত্যাহার করান। এরপর ইচ্ছেমত নদী খনন করে লাখ লাখ টাকা হরিলুট করেন। আশ্চর্যের বিষয় হলো ইতোপূর্বে পানাসি প্রকল্প যেখানটায় একবার করেছে, মৎস্য দপ্তর সেখানেই পুনরায় প্রকল্প দিয়েছে।
এব্যাপারে বড়াল রক্ষা আন্দোলন কমিটির সদস্য সচিব ও বাপার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এসএম মিজানুর রহমান জানান, বড়াল নদীকে অবক্ষয়িত জলাশয় হিসেবে চিহ্নিত করে মৎস্য দপ্তর প্রকল্প করেছে, এই প্রকল্পের কাজ কোনমত করে লাখ লাখ টাকা হরিলুট করা হয়েছে। নদীর সীমানা চিহ্নিত না করে, পাড় ছোট রকমে খনন করা হয়েছে। সুফল ভোগীদের দ্বারা মাটি কাটার বিধান রয়েছে। কিন্তু তা না করে ড্রেজার বা ভেগু মেশিন দিয়ে খনন করা হয়েছে। নদী দখলের সুযোগ করে দেয় হয়েছে। তিনি আরো জানান, যদি কাজ না করে সব টাকা মেরে খেত তাও ভালো হত। তিনি এই প্রকল্পের দূর্ণীতির বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানান। কথা হয় হরিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ মকবুল হোসেনর সাথে সুফলভোগীদের দ্বারা কাজ করার কথা থাকলেও ৫টি প্রকল্পের ৪০ লাখ টাকার কাজ মূলত কাজ তিনিই করছেন। তিনি জানান, আমার ইউনিয়নে কাজ শতভাগ হয়েছে। নদীতে বাঁধ দেয়া হয়নি বলে তিনি দাবি করেন। চাটমোহরে মৎস্য দপ্তরের এই সকল পকল্পে দূর্ণীতি ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ মাহবুর খাঁন জানান, আমরা তদন্ত করেছি কোন অনিয়ম হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে বড়াল পাড়ের মানুষ প্রকল্পে যারা দূর্ণীতি করেছেন, লাখ লাখ টাকা আত্নসাত করেছেন তাদের ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান।