পাকিস্তানের সেনা গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর সাবেক প্রধান অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসাদ দুররানীর এফিডেভিটের অনুলিপি ইসলামাবাদস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে হস্তান্তর করা হয়েছে।
পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক ‘দ্য নিউজ’ জানিয়েছে, গত মাসের ১৯ তারিখে এই এফিডেভিটের অনুলিপি বাংলাদেশের হাইকমিশনকে দেয়া হয়েছিল। পরে সেখান থেকে তা ঢাকার পররাষ্ট্র দফতরে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বা বিএনপিকে আইএসআই অর্থ দিয়েছিল বলে খালিজ টাইমসের ব্ক্তব্যের বরাত দিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে অভিযোগ তুলেছেন, এ এফিডেভিটের অনুলিপির মাধ্যমে তা ভিত্তিহীন বলে প্রমাণিত হয়েছে। পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে এফিডেভিট হিসেবে দেয়া বক্তব্যে জেনারেল দুররানি বিএনপি প্রসংগ দূরে থাকুক বাংলাদেশে প্রসঙ্গ নিয়েই কোনো কথা বলেননি।
অবশ্য এর আগে ঢাকার দৈনিক নয়াদিগন্তকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জেনারেল (অব.) আসাদ দুররানি বিএনপিকে অর্থ দেয়া প্রসঙ্গে কোনো কথা বলেননি বলে জানিয়েছিলেন। এ ছাড়া, পাকিস্তান সরকারও বিএনপিকে অর্থ দেয়ার কথিত বক্তব্য নাকচ করে বিবৃতি দিয়েছিলো। আসাদ দুররানি বিবিসি’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, তার বক্তব্যে বিএনপি অথবা অন্য কোনো বিদেশী সংস্থা বা ব্যক্তির প্রসঙ্গ নেই। এটা পুরোপুরি পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ের মামলা।
দি নিউজের খবরে বলা হয়, ভারতীয় সাংবাদিক ও বাংলাদেশের একটি প্রধান বাংলা দৈনিকের প্রতিনিধি দীপাঞ্জন রায় চৌধুরীকে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ গত ২ মার্চ সংস্থাটির নয়া দিল্লি কার্যালয়ে ডেকে পাঠায়। এর পরেই রায় চৌধুরীর লেখা একটি প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয় দুবাইভিত্তিক পত্রিকা খালিজ টাইমস-এ। পত্রিকাটির মালিক একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যক্তি। একইসঙ্গে বৃটিশ ট্যাবলয়েড ডেইলি মেইল-এর ভারতীয় সংস্করণেও প্রতিবেদনটি করেন রায় চৌধুরী
রায় চৌধুরী বাংলাদেশের যে বাংলা দৈনিকটির প্রতিনিধি, সেই দৈনিকেও প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।
দীপাঞ্জন রায়ের ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বাংলাদেশ সরকারের শীর্ষ স্থানীয় মহল থেকে শুরু করে এক শ্রেণীর মিডিয়া, বিএনপি ও দলটির নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে প্রচারণার ঝড় তুলে।
এদিকে, বাংলাদেশ সরকার এখনো এ এফিডেভিট পাওয়ার কথা স্বীকার করেনি। কিন্তু জেনারেল দূররানি এফিডেভিট পাওয়ার পর বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন মহল এ প্রসংগ নিয়ে বিএনপি বিরোধী বক্তব্য আর না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে দ্য নিউজকে জানিয়েছেন বাংলাদেশের খ্যাতনামা সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক সাদেক খান। তিনি বলেছেন, দুররানির এফিডেভিটটি দেখার পর আওয়ামী লীগের শীর্ষ ব্যক্তিরা পাকিস্তানের কাছ থেকে অর্থ নেয়ার অভিযোগটি ধামাচাপা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে মনে হচ্ছে।