এম. বেলাল হোসাইন, সাতক্ষীরাঃ ‘যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি চাই, পক্ষ নিলে রেহাই নাই, জামায়াত-শিবিরের আস্তানা, বাংলাদেশে রাখব না’ এ শ্লোগানকে ধারন করে শুক্রবার সাতক্ষীরা মুক্ত দিবস পালন করেছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। উপলক্ষে সাতক্ষীরা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ পালন করে নানা কর্মসূচি। কর্মসূচির মধ্যে ছিলো সাতক্ষীরা জজকোর্টের সামনে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি স্তম্ভে কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন। সেখান থেকে বিজয় র্যালী বের করে শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশের মধ্য দিয়ে বিনম্র শ্রদ্ধায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন যুদ্ধাপরাধীদের কুশপুত্তলিকা দাহ ও আলোচনা সভা।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সাতক্ষীরা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসংদের ইউনিট কমান্ডার এনামুল হক বিশ্বাস, আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ইঞ্জিনিয়র শেখ মুজিবুর রহমান (এমপি)। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ প্রশাসক মুনসুর আহমদ, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ নজরুল ইসলাম। এছাড়া অন্যান্যদের বক্তব্য রাখেন একাত্তরের রনাঙ্গনের লড়াকু সৈনিক মুক্তিযোদ্ধা আবু নাসিম ময়না, মীর মোস্তাক আহমেদ রবি সহ অন্যরা। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের সরদার, হাসনে জাহিদ জজ, আব্দুর রশিদ, মহিদ খান চৌধুরী দুলু, মোতাহার হোসেন, আব্দুল গফফার, মিজানুর রহমান, আজিজ হাসান, জালাল উদ্দীন, মোহাম্মাদ আলী, সন্তোষ কুমার, সিরাজুল ইসলাম, ইমান আলী, ফজর আলী,মাহবুবুর রহমানসহ জেলার সাত উপজেলার কমান্ডারগণ। বীর মুক্তিযোদ্ধা এড. মুস্তফা নূরুল আলমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ইঞ্জিনিয়র শেখ মুজিবুর রহমান এমপি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি স্তম্ভে অমুক্তিযোদ্ধা ও রাজাকারের নাম থাকতে পারবে না। মুক্তিযোদ্ধারা স্মৃতি স্তম্ভ থেকে অমুক্তিযোদ্ধা ও রাজাকারের নাম মুছে দিয়ে কালো কাপড়ে ঢাকা হয়েছে। আগামী ২ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রশাসন এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত না নিলে ওই দিন সাতক্ষীরা জজ কোর্টের সামনের ওই স্মৃতি স্তম্ভ ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন না হলে সাত দিন অচল করে দেয়া হবে সাতক্ষীরা। এছাড়া সাতক্ষীরার কাটিয়ায় পুরাতন হাসপাতালের স্থানে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মান করা হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা পরিষদ প্রশাসক মুনসুর আহমদ বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বিজয়ের এ মাসেই সম্পন্ন হবে। জামায়াত-শিবির এ বিচারকে বাধাগ্রস্থ করতে নাশকতা সৃষ্টি করতে পারে। তাই জামায়াত-শিবিরকে রুখতে হবে। জামায়াত শিবিরের আস্তানা গুড়িয়ে দিতে হবে। জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, জামায়াত-শিবিরের বিষ দাঁত উপড়ে ফেলে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করে জাতিকে কলঙ্ক মুক্ত করতে হবে।
মুক্তিযোদ্ধা আবু নাসিম ময়না , জামায়াত- শিবিরের ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবী জানা। সাবেক নৌ কমান্ডার মীর মোস্তাক আহমেদ রবি বলেন,শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি স্তম্ভে ৫ জন অমুক্তিযোদ্ধা ও একজন রাজাকারের নাম লেখা হয়েছে। এছাড়া জেলার সাত উপজেলার সকল শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নাম ওই স্মৃতি স্তম্ভে নাই। তাই ভেঙ্গে ফেলতে হবে ওই স্মৃতি স্তম্ভ।
সভাপতি বক্তব্যে কমান্ডার এনামুল হক বিশ্বাস বলেন, ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি স্তম্ভের থেকে অমুক্তিযোদ্ধা ও রাজাকারের নাম মুছে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নাম লিখতে হবে। অন্যথায় ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়া হবে স্মৃতি স্তম্ভ। যুদ্ধাপরাধীদের ফাসিতে না ঝুলানো পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধারা ঘরে ফিরবে না। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করতে হবে। অন্যথায় ৭দিন অচল থাকবে সাতক্ষীরায়