ডেস্ক রিপোর্ট: রংপুর মহানগরীর রবার্টসন্সগঞ্জ এলাকায় আটকেপড়া পাকিস্তানিদের ৩ নম্বর ক্যাম্পে দফায় দফায় সংঘর্ষের পর অগ্নিকাণ্ডে তিনশ’ বাড়ি ভস্মীভূত হয়েছে। পাওনা টাকা আদায় নিয়ে গতকাল (বুধবার) রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে রংপুর অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার নারায়ণ চন্দ্র বর্মা, পুলিশ, সাংবাদিক ও পথচারীসহ অর্ধ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। এ ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জাকির হোসেনকে প্রধান করে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। আগামী রোববারের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রবার্টসন্সগঞ্জ এলাকার ৩নং বিহারী ক্যাম্পে হারিণ মিয়ার হোটেল রাজু নামে বিহারী পট্টির এক ছেলে হোটেল বয় হিসেবে কাজ করে আসছিল। হোটেল মালিকের কাছে রাজু বেতন চাইলে তাকে মারধর করা হয়। এ ঘটনা রাজু পরিবারকে জানালে তার ভাই ও বিহারী পট্টির লোকজন রাত পৌঁনে নয়টার দিকে হারিণ মিয়ার কাছে প্রতিবাদ জানান। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। এক পক্ষ অবস্থান নেয় বাঙালীর পক্ষে অপর পক্ষ বিহারীর। এক পর্যায়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। খবর পেয়ে প্রথমে ১০/১২ জন পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলেও তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। এক পর্যায়ে আবার সংঘর্ষ শুরু হয়। এরই মধ্যে কে বা কারা বিহারী পট্টিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে রংপুর ও হারাগাছ থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। বিহারী ক্যাম্পের জনৈক আহমেদ আলী অভিযোগ করেন, পুলিশের উপস্থিতিতেই সেখানে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। বার বার চেষ্টা করা হলেও পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। বরং বিহারীদের ওপর পুলিশ ব্যাপক লাঠিচার্জ করেছে।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে বিহারীরা ক্যাম্পের আশপাশের কয়েকটি দোকানে ভাঙচুর চালায়। এ সময় তারা একটি স্কুলেও ভাঙচুর চালায়। বিহারী ক্যাম্পে এক হাজার বাড়ি রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের লোকজন কনকনে শীতের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে।