অসীম মোদক,মহেশপুরঃ
যে ঘ্রাণ মনকে বিমোহিত করার পাশাপাশি জানান দিচ্ছে মধুমাসের আগমনী বার্তা। মৌমাছির দল ঘুরে বেড়াচ্ছে গুনগুন শব্দে। ছোট পাখিরাও মুকুলে বসছে মনের আনন্দে। এমন দৃশ্যের দেখা মিলেছে ঝিনাইদহের মহেশপুরে গ্রাম শহর সর্বত্রই।
রঙিন ফুলের সমারোহে প্রকৃতি যেমন সেজেছে বর্ণিল সাজে। তেমনি সেজেছে মহেশপুরের বিভিন্ন আমবাগান ও ব্যক্তি উদ্যোগে বাড়ির আঙিনায় লাগানো আমগাছগুলোতে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মতে, এ বছর মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মুকুলে ভরে গেছে বাগানসহ ব্যক্তি উদ্যোগে বাড়ির আঙিনায় লাগানো আমগাছগুলোতে। এ বছর উপজেলায় ৪৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আম চাষ হচ্ছে। যা থেকে ৪ হাজার ৩৩ মেট্রিক টন ফলনের আশা করা যাচ্ছে।
বাগান মালিকরা জানান, গাছে মুকুল আসার আগে থেকেই তারা গাছের প্রাথমিক পরিচর্যা শুরু করেছেন। যাতে গাছে মুকুল বা গুটি বাঁধার সময় কোনো সমস্যার সৃষ্টি না হয়। মুকুলে রোগ বালাইয়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পরিচর্যা করা হচ্ছে। এ অঞ্চলে দেশি আমের পাশাপাশি আম্রপালি, ল্যাংড়া, ফজলি, লতা বম্বাই, হাড়ি ভাংঙ্গা জাতের আম অন্যতম।
মহেশপুর উপজেলার আজমপুর, মান্দারবাড়ীয়া, নাটিমা, সুন্দরপুর, পান্তাপাড়া, ভালাইপুর, দত্তনগর, কুশাডাঙ্গ্সহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, আমগাছে শোভা পাচ্ছে কেবলই মুকুল। এ যেন হলুদ আর সবুজের মহামিলন। মুকুলে ছেয়ে আছে গাছের প্রতিটি ডালপালা। চারদিকে ছড়াচ্ছে সেই মুকুলের সুবাসিত ঘ্রাণ। তবে বড় আকারের চেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের গাছে বেশি মুকুল ফুটেছে।
উপজেলার নাটিমা গ্রামের খেদের আলী জানান, চার বছর আগে তিনি আমের চাষ শুরু করেন। প্রথম পর্যায়ে সামান্য পরিমাণ জমিতে পরীক্ষামূলক আম চাষ শুরু করেন তিনি। প্রথম বছরেই লাভ করায় জমির পরিমাণ বাড়িয়ে শুরু করেন আম চাষ। বর্তমানে তার বাগানের আমগাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। বেশির ভাগ গাছ মুকুলে ছেয়ে গেছে। কিছু গাছে মুকুল বের হচ্ছে। মুকুলের ম ম গন্ধে তার চোখে ভাসছে স্বপ্ন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান আলী জানান, মহেশপুরে আবহাওয়া ও মাটি আম চাষের জন্য উপযোগী। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমের ফলন বিগত বছরের তুলনায় অনেক বেশি পাওয়ার আশা করা যাচ্ছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে মুকুলগুলো নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা নেই। আমের মুকুল আসার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কী কী পরিচর্যা করতে হবে সে বিষয়ে কৃষি অফিস সব সময় পরামর্শ দিয়ে আসছেন।