কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে এবছর আগামজাতের মুলকাটা পেঁয়াজ চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। পেঁয়াজ বীজের দামও কম হওয়ায় চাষীদের উৎপাদন খরচও কমেছে। ফলে মনের আনন্দে মুখভরা হাসি নিয়ে চাষীরা ক্ষেত থেকে মুলকাটা পেঁয়াজ ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বর্তমান বাজারে পেঁয়াজের দাম ভালো হওয়ায় খুশি তারা।
দৌলতপুর কৃষি অফিসের তথ্য মতে এ বছর উপজেলায় মুলকাটা পেঁয়াজ চাষ হয়েছে ২ হাজার ৫০০ হেক্টরে জমিতে। বীজ বা চারার দাম কম হওয়ায় প্রতি বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষে চাষীদের খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা থেকে ২৫ হাজার টাকা। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় প্রতি বিঘা জমিতে পেঁয়াজের ফলন হচ্ছে ৭০ মন থেকে ৮০ মন পর্যন্ত। যা থেকে বিঘাপ্রতি চাষীদের লাভ হচ্ছে ২৫ হাজার টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা। তবে বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানী না করার দাবী চাষীদের। দৌলতপুর উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের শশীধরপুর এলাকার সফল কৃষক ও পেঁয়াজ চাষী নাসির উদ্দিন জানান, বিগত কয়েক বছর পেঁয়াজ চাষ করে আমাদের মত চাষীদের লাভের পরিবর্তে লোকসান গুনতে হয়েছে। তবে এবছর পেঁয়াজের বীজের দাম কম হওয়ায় উৎপাদন খরচ কম হয়েছে। বিঘা প্রতি ফলনও ভাল হচ্ছে। প্রতি বিঘা জমিতে ৭০ মন থেকে ৭৫ মন আবার কারো আরো বেশী ফলন হচ্ছে। লাভও হচ্ছে ভাল। পার্শ্ববর্তী স্বরুপপুর গ্রামের পেঁয়াজে চাষী নিজাম উদ্দিন জানান, প্রথমে যারা মাঠ থেকে পেঁয়াজে তুলে বিক্রয় করেছে তাদের বেশী লাভ হয়েছে। এখন তুলনামূলক কম লাভ হচ্ছে। তবে বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি না করার দাবী জানান তিনি। চাষীদের কাছ থেকে পেঁয়াজ ক্রয় করে পাইকার ব্যবসায়ীরাও দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে তারাও লাভবান হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন আড়তদার বুলবুল আহমেদ সহ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
পেঁয়াজ চাষে চাষীদের বীজ, সার সহ প্রয়জনীয় প্রনোদনা প্রদান এবং প্রযুক্তির ব্যবহার ও পরামর্শ দেওয়ায় পেঁয়াজে ফলন ভাল হয়েছে। উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় চাষীরা পেঁয়াজ চাষে লাভবান হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন দৌলতপুর কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ নূরুল ইসলাম। চাষীদের উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত হলে তারা পেঁয়াজ চাষে আগ্রহী হবে। ফলে কমবে পেঁয়াজ আমদানী নির্ভরতা। এমনটাই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার কাছে তেমন কোন হিসেব নেই জেলার ৬টি উপজেলায় কত হেক্টর জমিতে মুলকাটা পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে। ওই দপ্তর জানায় সব উপজেলাতেই কিছু কিছু জমিতে মুলকাটা পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে। তাতে করে ফলনও ভালো পাচ্ছে কৃষকেরা।