বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) শিক্ষক ও ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ছাত্র প্রতিনিধি এবং শিক্ষকদের আলোচনার ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বুধবার শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক কে এম মাসুদ আন্দোলনরত শিক্ষার্থী এবং গণমাধ্যমের সামনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছন।
এদিকে বুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম কুষ্টিয়ায় আবরারের বাড়ি গিয়েছেন। এতে করে রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তের বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বুয়েটের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন তৃতীয় দিনে গড়িয়েছে। সকাল থেকে বুয়েটের শহীদ মিনার চত্বরে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। সেখানে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে নতুন ১০ দফা দাবি তুলে ধরা হয়েছে।
দাবিগুলো হল, খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের শনাক্ত করে সবার ছাত্রত্ব আজীবন বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে, মামলা চলাকালে সকল খরচ এবং আবরারের পরিবারের সকল ক্ষতিপূরণ বুয়েট প্রশাসনকে বহন করতে হবে, দায়েরকৃত মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের অধীনে স্বল্পতম সময়ে নিষ্পত্তি করতে হবে, অবিলম্বে চার্জশিটের কপিসহ অফিসিয়াল নোটিশ দিতে হবে, ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কেন ৩০ ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পরও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়নি, তা তাকে সশরীরে ক্যাম্পাসে এসে আজ বিকেল ৫টার মধ্যে জবাবদিহি করতে হবে, একই সঙ্গে ডিএসডব্লিউ স্যার কেন ঘটনাস্থল থেকে পলায়ন করেছেন, এ বিষয়ে তাকে আজ বিকেল ৫টার মধ্যে সবার সামনে জবাবদিহি করতে হবে।
এছাড়া আবাসিক হলগুলোতে র্যাগের নামে ও ভিন্ন মতাবলম্বীদের ওপর সকল প্রকার শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন বন্ধে প্রশাসনকে জড়িত সকলের ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে। একই সঙ্গে আহসানউল্লাহ হল এবং সোহরাওয়ার্দী হলের পূর্বের ঘটনাগুলোতে জড়িত সকলের ছাত্রত্ব বাতিল ১১ অক্টোবর,২০১৯ তারিখ বিকেল ৫টার মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে, পূর্বে ঘটা এ ধরনের ঘটনা প্রকাশ ও পরবর্তীতে ঘটা যেকোনো ঘটনা প্রকাশের জন্য একটা কমন প্লাটফর্ম বা সাইট থাকতে হবে এবং নিয়মিত প্রকাশিত ঘটনা রিভিউ করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে,
রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে আবাসিক হল থেকে ছাত্র উৎখাতের ব্যাপারে অজ্ঞ থাকা এবং ছাত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হওয়ায় শেরে বাংলা হলের প্রভোস্টকে ১১ অক্টোবর, ২০১৯ তারিখ বিকেল ৫টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে।
উল্লেখ্য, গত রবিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগ নেতারা। এরপর থেকে এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে বুয়েট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের সকল ক্যাম্পাসে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে আবরারের বাবা বরকতুল্লাহ মোট ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় একটি মামলা করেছেন। ওই মামলায় মঙ্গলবার পর্যন্ত মোট ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আর সাংগঠনিক তদন্তের ভিত্তিতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি তাদের বুয়েট শাখার ১১ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করেছে।