সাইফুল ইসলাম, সিংড়া (নাটোর):
শষ্য ও মৎস্য ভান্ডার খ্যাত দেশের সর্ববৃহৎ বিল অঞ্চল চলনবিল। নাটোর জেলার সর্ববৃহৎ উপজেলা সিংড়াসহ চলনবিলাঞ্চলে আগাম জাতের বোনা আমন ও রোপা ধান কাটা শুরম্ন হয়েছে। বোনা আমন ধানের বাম্পার ফলনে কৃষক খুশি হলেও বাজারে ধানের দাম কম, শ্রমিক সংকট, ফড়িয়াচক্র ও সুদখোর মহাজনদের কারণে কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েছে। বর্তমান বাজারে বোনা আমন ধান ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। স্বল্প মূল্যে ধান বিক্রয় করে কৃষকেরা চড়া সুদের টাকা পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছে।
সিংড়া উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে চলনবিলাঞ্চলের সিংড়া উপজেলায় ১০হাজার ৮শ’ হেক্টর জমিতে বোনা আমন ও ২০হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ হয়েছে। কয়েক দফা বন্যায় বোনা আমন ধানের ÿতি হলেও বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে বোনা আমন ধানের ১০মণ হারে ফলন পাচ্ছে কৃষক। বোনা আমন ধানে পানি সেচ না লাগা ও নিড়ানী খরচ স্বল্প হওয়ায় কৃষক লাভবান হচ্ছে। কিন্তু শ্রমিক সংকট, ফড়িয়াচক্র ও সুদখোর মহাজনদের কারণে চলনবিলাঞ্চলের লÿাধিক কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েছে। তাছাড়া প্রতিবিঘা জমির ধান কাটার জন্য কৃষককে ১হাজার থেকে ১৪শ’ টাকা গুনতে হচ্ছে। যেখানে অন্যান্য বছর ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকা লাগতো। চলনবিলাঞ্চলের হাসান আলী, আব্দুল, মোবারকসহ কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, বোনা আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে ধানের দাম ৭শ’ থেকে ৮শ’ টাকা হলে ভালো হতো। শ্রমিক সংকটের কারণে অনেকের ধান মঠেই পড়ে রয়েছে।
কৃষি অফিস সূত্রে আরো জানা যায়, চলনবিলের মাঝে বোনা আমন থাকায় বন্যার পানিতে ভেসে আসা জৈব পদার্থ ধরে রাখে এবং জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়। যা পরবর্তী ফসল বোরো আবাদে জমির পানি ধারণ ÿমতা বাড়ে এবং পোকার আক্রমণ কম হয়। চলতি বছরে চলনবিলাঞ্চলে প্রায় ৮০থেকে ৯০হাজার হেক্টর জমিতে বোনা আমন আবাদ হয়েছে। কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকলে ও সরকারী উদ্যোগ থাকলে চলনবিলের লÿ লÿ হেক্টর জমিতে বোনা আমন আবাদ করা সম্ভব।
সিংড়া উপজেলা কৃষি অফিসার সুব্রত কুমার সরকার জানান, চলতি বছরে ৩দফা বন্যার কারণে ফলন নিয়ে আশংকা থাকলেও বোনা আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।