ডেস্ক রিপোর্ট :
ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান এবার পারস্য উপসাগরের আকাশ থেকে একটি মার্কিন পাইলটবিহীন বিমান বা ড্রোন আটক করেছে। ইরানের ইসলামী রেভ্যুলুশনারি গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি জানিয়েছে, ইরানের আকাশসীমা লঙ্ঘনের পর ‘আগ্রাসী’ ড্রোনটিকে আটক করা হয়। এর আগে গত ১ নভেম্বর ইরানের আকাশসীমায় একটি মার্কিন ড্রোন অনুপ্রবেশ করার পর তা গুলি করে তাড়িয়ে দিয়েছিল তেহরান। ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমাদ ওয়াহিদি ৮ নভেম্বর এ খবর জানিয়েছিলেন।
আইআরজিসি’র নৌ শাখার প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল আলী ফাদাভি আজ (মঙ্গলবার) বলেছেন, গত কয়েকদিন ধরে একটি মার্কিন ড্রোন পারস্য উপসাগরের আন্তর্জাতিক আকাশসীমায় গুপ্তচরবৃত্তি ও তথ্য সংগ্রহের কাজ করছিল। এ সময় এটির ওপর গভীর নজর রাখে আইআরজিসি’র বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিট। এক পর্যায়ে ড্রোনটি ইরানের আকাশসীমায় প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে এটিকে আটক করে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয় তেহরান।
ড্রোনটি ‘স্ক্যানঈগল’ শ্রেণীর বলে জানান অ্যাডমিরাল ফাদাভি। তিনি বলেন, এ ধরনের ড্রোন সাধারণত বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ থেকে আকাশে ওড়ানো হয়।
কৌশলগত পারস্য উপসাগর ও হরমুজ প্রণালীর জল ও আকাশসীমায় আগ্রাসী শক্তির যে কোনো ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড বানচাল করে দেয়ার জন্য আইআরজিসি সদাপ্রস্তুত রয়েছে তিনি জানান। আলী ফাদাভি বলেন, আইআরজিসির নৌ ইউনিট গত ২৫ বছর ধরে পারস্য উপসাগরে নিজের শক্তিমত্তার যে পরিচয় দিয়েছে সে সম্পর্কে শত্রু পুরোপুরি অবগত রয়েছে।
গত ১ নভেম্বর ইরানের তাড়া খেয়ে মার্কিন ড্রোন পালিয়ে গেলেও ওয়াশিংটন সে কথা স্বীকার করে এক সপ্তাহ পর ৮ নভেম্বর। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ওই ঘটনার প্রভাব পড়তে পারে এবং আমেরিকার জনগণ ইরানের হাতে তাদের বিমানের তাড়া খাওয়ার ঘটনা জেনে গেলে বারাক ওবামাকে ভোট নাও দিতে পারে- এ আশঙ্কার কারণে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষিত হওয়ার পর সে স্বীকারোক্তি দেয় হোয়াইট হাউজ।
মার্কিন সরকারের স্বীকারোক্তির পর তেহরান ওই ড্রোন তাড়িয়ে দেয়ার কথা ঘোষণা করে। সে সময় ইরানের রেভ্যুলুশনারি গার্ড বাহিনীর দুই পদস্থ কর্মকর্তা মেজর জেনারেল মোহাম্মাদ আলী জাফারি ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির আলী হাজিযাদেহ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছিলেন, মার্কিন ড্রোন আবার ইরানের আকাশসীমায় প্রবেশ করলে এর বিরুদ্ধে ‘কঠোর ব্যবস্থা’ নেয়া হবে।
এর আগে ২০১১ সালের ডিসেম্বরে ইরানের সশস্ত্র বাহিনী চালক বিহীন একটি মার্কিন বিমান ভূপাতিত করেছিল। আফগানিস্তান থেকে মার্কিন ড্রোনটি ইরানের আকাশসীমায় ঢুকে পড়লে ইরানের সশস্ত্রবাহিনীর ইলেক্ট্রনিক ওয়ারফেআর ইউনিট বিমানটিকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিতে সক্ষম হয়। পরে দূর নিয়ন্ত্রণের সাহায্যে ড্রোনটি অক্ষত অবস্থায় মাটিতে নামিয়ে আনে ইরান।
পরে আরকিউ-১৭০ মডেলের ড্রোনটি ফেরত চান মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। কিন্তু তেহরান সে অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে।