এম.পলাশ শরীফ,মোড়েলগঞ্জ থেকে: বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বর্তমানে আনাচে কানাচে চলছে উচ্চ ও চক্রবৃদ্ধি হারে সুদের ব্যবসা। মহাজনদের এসব ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে এলাকার হতদরিদ্র ও অভাবী পরিবার। উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের প্রায় দুই শতাধিক গ্রামে দারিদ্র্যপীড়িত জনাসাধারণ বিভিন্ন এনজিও সমিতি, দাদন ব্যবসায়ী সুদখোর ও মহাজনদের ঋণের ফাঁদে পড়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। ঋণের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে বসতভিটা, হালের বলদ,গরু, ছাগল, হাঁস মুরগী,সহ স্বর্ণালঙ্কার বিক্রি করতে হচ্ছে। অনেক পরিবারকে মাসের পর মাস কিস্তি পরিশোধ করেও শেষ হয় না ঋণের টাকা। বন্ধ হয়ে গেছে অনেকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ঋণ পরিশোধ ব্যর্থ অনেক মানুষ পরিবার পরিজন ফেলে ঢাকা,চট্রগ্রাম বন্দরে গারমেন্স কিংবা ফ্যাক্টরীতে চাকুরি করে কোন রকম জীবনযাপন করছে। জানা যায়, মোড়েলগঞ্জসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এক শ্রেণীর এনজিও সমিতিও সুদি ব্যবসায়ী চক্রের শোষণের নিরাপদ ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এসব অঞ্চলে সমিতি ও এনজিও ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে উঠছে। দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে এসব সমিতি ও এনজিও গুলো মোটা অঙ্কের সুধে ঋণে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এদের নাম ও কাজের বিবরণ শুনে মনে হবে যে হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীকে স্বাবলম্বী ও কর্মসংস্থান করে দেয়ার জন্য এরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু চোখে পড়ে এদের শোষণ, নির্যাতন ও সমাজ বিরোধী কার্যকলাপ। কোনো কারণে কোনো সদস্য ঋণ পরিশোধে বিলম্ব হয়লে কিংবা ব্যর্থ হলেই তাদের আসল চেহারা উম্মুচিত হয়ে উঠে। এসব সমিতি ও এনজিও মূলত দরিদ্র মানুষকে স্বাবলম্বী ও কর্মসংস্থানের লোভ দেখিয়ে মোটা অঙ্কের সুদের ব্যবসাটা বেশ জমে উঠেছে। ফলে সাপ্তাহিক ও দৈনিক কিস্তি পরিশোধ ব্যর্থ হলে সমিতিও এনজিওগুলোর লোক জনের বাড়ি ঘরের টিন দোকানের মালামাল। গরু, ছাগল, আসবাবপত্র, হাঁস-মুরগি ইত্যাদি মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়া নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি এরা তাদের কার্যালয়ে কিস্তির জন্য সদস্যদের বসিয়ে রাখে। বিভিন্ন গ্রামের শত শত মানুষ জনের দারে টপকে নিঃস্ব হয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে অনেকে। এলাকার কয়েক জন ঋণ গ্রহীতা জানান, কয়েক সদ ব্যবসায়ীকে এক হাজার টাকায় প্রতি সপ্তাহে ১শ টাকা হারে সুদ দিতে হয়। ভোক্ত ভোগিরা জানান, গ্রামের কৃষক ও ব্যবসায়ীরা সুদী ব্যবসায়ীর কাছে জিম্মি হয়ে পড়ে। এলাকাবাসী জানায়, সুদখোর ও এনজিওদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপ ও তদারকি জোর ধার করার অনুরোধ জানান। তা না হলে দরিদ্র মানুষগুলো আরো নির্যাতিত হবে।