এম.পলাশ শরীফ,মোড়েলগঞ্জ: বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার মধুমতি নদীর চরে জমির ধান কাটাকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ দিনের বিবদমান দু’টি গ্রুপের সংর্ঘষে এক ব্যাক্তি নিহত ও ২০ জন গুরুতর জখম হয়েছে। এ ঘটনায় প্রতিপক্ষের দেয়া আগুনে ৪ টি বাড়ি ভষ্মিভূত হয়ে কমপক্ষে অর্ধ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। ঘটনার পর এলাকার সাধারণ মানুষ ভয়ে তটস্থ হয়ে পড়েছে। ওই এলাকার কেউ টু-শব্দটি করতে নারাজ। নিহতের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। অপরদিকে, আগুনে নিঃস্ব পরিবার গুলো ছোট্ট শিশুদের নিয়ে খোলা আকাশের নিচে আহাজারি করে দিন কাটাচ্ছে। ঘটনার পর বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পঙ্কজ কুমার রায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
জানা গেছে, গত কয়েক যুগ ধরে রুহুল আমীন শরীফ ও মহসীন মীরের মধ্যে মধুমতি নদীর ৮২ একর জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। প্রতি বছরই এখানে দুই গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষে শত শত লোক আহত হয়। গত বুধবার রুহুল আমীন শরীফের লোকজন বিবাদমান ওই চরে সকাল ১১ টায় ধান কাটতে থাকে এ সময়ে প্রতিপক্ষ মহসীন গ্রুপের লোকজন কাটা ধান ছিনিয়ে আনতে লেগে দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নেয়। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে ওই ধান মহসীন গ্রুপের সামছুল আলমের জিম্মায় রেখে দেয়। এ ঘটনার জের ধরে বিকেলে চিঙ্গুড়িয়া গ্রামের সামছুল আলম বাড়িতে ফেরার পথে প্রতিপক্ষ সাইদ বিশ্বাসের নেতৃত্বে সংঙ্গবদ্ধ সন্ত্রাসীরা তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। পরে সন্ধ্যায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিৎকিসাধীন অবস্থায় সামছুল আলম মারা যায়।
এ খবর চিতলমারীতে ছড়িয়ে পড়লে মহসিন গ্রুপের লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে প্রতিপক্ষের সাথে সংর্ঘষে লিপ্ত হয়। এ সময় তারা সাবেক পুলিশ কর্তকতা মহিউদ্দিনের বসত বাড়ীসহ ৪টি বাড়িতে অগ্নি সংযোগ করে। ঘটনার পর এলাকার সাধারণ মানুষ ভয়ে তটস্থ হয়ে পড়েছে। ওই এলাকার কেউ টু-শব্দটি করতে নারাজ। নিহতের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। অপরদিকে আগুনে নিঃস্ব পরিবার গুলো ছোট্ট শিশুদের নিয়ে খোলা আকাশের নিচে আহাজারি করছে।
দীর্ঘদিন ধরে মধুমতির এই চরের জমি দখল নিয়ে সংর্ঘষ চলে আসছে। সম্প্রতি রুহুল আমীন গ্রুপের প্রধান রুহুলের পা ভেঙ্গে দেয়া প্রতিপক্ষ মহসিন গ্রুপ। এ চরের জমি দখল নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান শিকদার মতিয়ার রহমান ও সাবেক চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ আহম্মেদ পক্ষে বিপক্ষে অবস্থায় নিয়েছে।
ওই এলাকার বেল্লাল শেখ ও সাঈদ খানসহ অসংখ্য লোক জানান, এখানে কয়েক যুগ ধরে মধুমতির চর দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এই চর দখলকে কেন্দ্র করে ১৯৮২ সালে শহীদ মীর নামে একজন খুন হয়। প্রতি বছরই এখানে বোরো মৌসুমে কবুলত গ্রুপ ও আমলনামা গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।