ঠাকুরগাঁওয়ের গ্রামাঞ্চলে ছেলে ধরা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিদিন কোন না কোন গ্রামে অপরিচিত কোন লোক বা বোরকা পড়া মহিলা পেলেই তাকে হুক্কু বা ছেলে ধরা সন্দেহে আটকের ঘটনা ঘটছে। এদিকে গত ২ দিনে ৩ ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে জনতা।
গতকাল বুুুুধবার ঠাকরগাঁও সদর উপজেলার শিবগঞ্জ এলাকায় ছেলে ধরা সন্দেহে জনতা আবু বক্কর (৬৫) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে। আটককৃত ব্যক্তি নিজেকে ভিক্ষুক বলে দাবি করেছেন। তার বাড়ি পাশ্ববর্তী পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার টেপরিগঞ্জ গ্রামে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন ওইদিন পারপুগি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে মনোয়ার (১০) নামে এক শিশু গরুর জন্য ঘাস তুলছিল। ওই সময় আবু বক্কর পাশবর্তী একটি ভট্টা ক্ষেতে অবস্থান নেয় এবং ওই শিশুকে একটি লাল টুকটুকে ফুল দেওয়ার জন্য কাছে ডাকে। শিশুটি চিৎকার শুরু করলে আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে ওই বৃদ্ধকে গণধোলাই দিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে হস্তান্তর করে। পরে ইউপি চেয়ারম্যান দবিরুল ইসলাম আটকব্যক্তিকে পুলিশে সোপর্দ করে। তার কাছ থেকে জনতা নগদ ২০ হাজার টাকা, একটি কাচি, বেডসহ বিস্কট ও চানাচুরের প্যাকেট উদ্ধার করে।
অপরদিকে গত সোমবার শহরের মাদ্রাসা পাড়া এলাকায় সালন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ম শ্রেণীর ছাত্র রাহাতকে ২ রিক্সাচালক কাছে ডেকে হাতে চকলেট ধরিয়ে দেয়। এলাকার লোকজন দেখতে পেয়ে রাজু (১৭) ও হাসান (১৬) নামে ২ রিক্সাচালককে ছেলে ধরা সন্দেহে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। একই দিন বরুনাগাঁও আবুল হোসেন কলেজের সামনে জনতা এক পাগলি মহিলাকে আটক করে।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আখানগর বাজারে জনতা এক পাগলকে গণধোলাই দেয়। পরনে ছেড়া কাপড়, সঙ্গে এক পলিথিন পচা ভাত ও পানির বোতল দেখে এলাকার লোকজন তাকে ছেলে ধরা আতঙ্কে মারধর করে। অপরদিকে বড়ধাম এলাকায় অপরিচিত এক ব্যক্তিকে ছেলে ধরা আতঙ্কে স্থানীয়রা বেধরক মারপিট করে।
এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও থানার ওসি গোপাল চক্রবর্তী জানান, ঠাকুরগাঁওয়ে শিশু অপহরনের ঘটনা নেই। বর্তমানে ছেলে ধরা বা হুক্কু হিসেবে যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে তার কোন ভিত্তি নেই। সেটি গুজব মাত্র।