ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্য গঠিত হওয়ার পর গত ১০ বছরে সেখানে ৭,৫৬৩ টি ধর্ষণের অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছে। স্থানীয় এনজিও ‘ঝাড়খণ্ড হিউম্যান রাইটস মুভমেন্ট’ বা জেএইচআরএম-এর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা আইএএনএস এ খবর জানিয়েছে।
মানবাধিকার সংগঠনটি আজ রাজ্যের রাজধানী রাঁচিতে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে বলেছে, ঝাড়খণ্ডের নারীরা পণপ্রথা এবং ধর্ষণের চরম শিকারে পরিণত হচ্ছেন। রাজ্য সরকার ও জাতীয় অপরাধ রেকর্ড ব্যুরোর পরিসংখ্যানের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে বলে জেএইচআরএম জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১০ বছরে গোটা ভারতে এক লাখ ৯০ হাজার আটটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে ঝাড়খণ্ডের ৭,৫৬৩ জন নারী এ পাশবিক অত্যাচারের শিকার হয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০১ থেকে ১০১০ সাল পর্যন্ত রাজ্যে ২,৭০৭ জন নারী যৌতুকের দাবিতে নিহত হয়েছেন এবং যৌতুক সংক্রান্ত নির্যাতনের শিকার হয়ে থানায় ৩,৩৯৮টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। একই সময়ে ঝাড়খণ্ডে ৩,৮৫৪ জন নারী অপহৃত হয়েছেন।
এ ছাড়া গত দশ বছরে রাজ্যটিতে ইভটিজিংয়ের শিকার হয়েছেন ৩,৩৮৪ জন, যৌন নিপীড়িত হয়েছেন ২৩০ জন, ১৩৬টি মেয়েকে পাচার করা হয়েছে এবং ৭৫জনকে পতিতাবৃত্তির কাজে বাধ্য করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ঝাড়খণ্ডে ধর্ষিতা নারীদের মধ্যে শতকরা ৫.৩ ভাগ পরিবারের সদস্যদের হাতে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। সারা ভারতে এই হার শতকরা ২.৬ ভাগ। এ ছাড়া, আত্মীয়-স্বজনের হাতে ধর্ষিত হয়েছেন শতকরা ৯ ভাগ, ভারতজুড়ে যার গড় হিসেব ৬.৭ ভাগ। ৩৪.৮ ভাগ নারী ধর্ষিতা হয়েছেন প্রতিবেশিদের মাধ্যমে। সারা ভারতে প্রতিবেশিদের হাতে ধর্ষিত হন ৩৪.৫ ভাগ নারী।
মানবাধিকার সংগঠন জেএইচআরএম এর সভাপতি গ্ল্যাডসন ডুনডাং বলেছেন, “রাজ্য সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয়েছে। এ ছাড়া, নারীদের প্রতি অন্যায় প্রতিরোধে সমাজেরও দায়িত্ব রয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শতকরা ৫ ভাগেরও বেশি নারী ধর্ষিত হয়েছেন পরিবারের সদস্যদের দ্বারা। যখন একটি মেয়ে তার ঘরে নিরাপদ নয়, তখন আমরা কীভাবে তাকে প্রতিবেশি এবং দুর্বৃত্তদের হাত থেকে রক্ষা করবো?”
তিনি এ ব্যাপারে সবাইকে নৈতিক শিক্ষা মেনে চলার পাশাপাশি রাজ্য সরকারকে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগের আহবান জানিয়েছেন।