ডেস্ক রিপোর্ট: ৭ এপ্রিল : বাংলাদেশের বিশিষ্ট সাংবাদিক শফিক রেহমানের লেখা ও সম্পাদিত ৭টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেছেন বিরোধী দলের নেত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
আজ (শনিবার) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের টেনিস লনে জি-৯ নামে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান আয়োজিত প্রকাশনা উৎসবে তিনি এসব বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন। বই সাতটি হলো- ‘সংগ্রামী খালেদা জিয়া’, ‘ডেমোক্রেটিক লিডার খালেদা জিয়া’, ‘রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমান’, ‘স্টেটসম্যান জিয়াউর রহমান’, ‘পলোগ্রাউণ্ড লুণ্ঠন’, ‘নেড়ী কুকুরের কাণ্ড’, ও ‘নেড়ী কুকুরের কীর্তি’।
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতে চলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে শফিক রেহমান বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে পাকিস্তান চলে যেতে বলেছেন কিন্তু খালেদা জিয়া পাকিস্তান যাবেন কেন? তিনিতো আগেই বলেছেন, বাংলাদেশই তার একমাত্র ঠিকানা। বরং প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করবো তিনি যেন ভারত অথবা আমেরিকায় চলে যান। কারণ ওই দুই দেশে দীর্ঘকাল থাকার অভ্যাস তার আছে।”
শফিক রেহমান বলেন, “যে কেউ আমার সমালোচনা করে বলতে পারেন যে, আমি একটি বিশেষ দলের বা বিশেষ ব্যক্তির পক্ষে লিখেছি। অর্থাৎ আমি পক্ষপাতিত্ব করছি। অন্যভাবে তারা বলতে পারেন আমি নিরপেক্ষ নই। এই সমালোচনার উত্তরে ম্যাডাম খালেদা জিয়ার একটি বাণী আমি আপনাদের মনে করিয়ে দিতে চাই। তিনি বলেছিলেন, পাগল ও শিশু ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ নয়। তার সেই কথা আমি একটু সম্প্রসারিত করে আজ বলতে চাই, পাগল, শিশু ও সুবিধাবাদী ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ নয়। আমি সমালোচিত হতে পারি জেনেও সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য বিবেকের তাড়নায় এই বইগুলো লিখেছি।” তিনি বলেন, “আমি মুক্তিযুদ্ধের সময়ে নিরপেক্ষ ছিলাম না। মুক্তির পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলাম। আমি স্বৈরাশাসক এরশাদের সময়ে নিরপেক্ষ ছিলাম না। আমি গণতন্ত্রের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলাম।” জার্মান কবি দান্তের উদ্ধৃতি দিয়ে শফিক রেহমান বলেন, “খুব বড় নৈতিক সংকটের সময়ে যারা তাদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখেন তাদের জন্য নরকের সবচেয়ে বেশি গরম জায়গা রিজার্ভ করা আছে।” শফিক রেহমান বলেন, “প্রাবন্ধিক বাম রাজনীতিবিদ বদরুদ্দীন ওমর-এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলতে হয়, বাংলাদেশে এখন উন্মাদ ও বিকারগ্রস্ত শাসকের সময় চলছে। এই সংকটের সময়ে নৈতিকবোধ সম্পন্ন কোনো ব্যক্তির পক্ষে নিরপেক্ষ থাকা সম্ভব নয়। যেমনটা সম্ভব ছিল না মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র যুদ্ধের সময়ে।”
‘জিয়া যখন স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গণে লড়ছেন তখন শেখ মুজিবুর রহমান কোথায় ছিলেন’ এ প্রশ্ন তুলে শফিক রেহমান বলেন, “জিয়াউর রহমানকে তারা (আওয়ামী লীগ) পাকিস্তানের চর বলে। কিন্তু তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে এ দেশের মানুষকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। নিজেও নয় মাস মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। কিন্তু তখন বঙ্গবন্ধু আত্মসমর্পন করে পাকিস্তান চলে যান।”
শফিক রেহমান বলেন, “এই বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানটি করতে সরকারের অনেক বাধা পেরোতে হয়েছে।”
গত ২৭ মার্চ বেগম খালেদা জিয়ার এই বইয়ের মোড়ক উন্মোচনের কথা ছিল। হোটেল রূপসী সোনার বাংলায় বুকিং দিয়ে এক হাজার অতিথিকে কার্ড দেয়া হলেও অনুষ্ঠানের মাত্র ১৮ ঘণ্টা আগে হোটেল কর্তৃপক্ষ সরকারি এক গোয়েন্দা সংস্থার বরাত দিয়ে অনুষ্ঠান আয়োজন করতে দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। ওই দিনই জাতীয় প্রেস ক্লাবে এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন শফিক রেহমান। পরে প্রকাশনা উৎসবের নতুন তারিখ ঠিক করা হয় ৮ এপ্রিল