ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি,২এপ্রিল:
ঠাকুরগাঁও সিএম আইয়ুব বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩ মাস ধরে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে তালা ঝুলছে। প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে অফিস করতে না পারায় ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। প্রধান শিক্ষককে মানতে অস্বৃকিতির কারণে শিক্ষক কর্মচারীরাও বেতন ভাতা থেকে বঞ্চিত রয়েছে দীর্ঘ ৪ মাস ধরে।
সংশিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, সিএম আইয়ুব বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনোয়ারা চৌধুরীর চাকুরির মেয়াদ গত ৩১ ডিসেম্বর শেষ হয়। পরবর্তীতে তিনি তার চাকুরির মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন জানালে শিক্ষা বোর্ড তার চাকুরির মেয়াদ এক বছর বর্ধিত করে। এ সময় তিনি সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা পাবেননা।
এদিকে তিনি ১ জানুয়ারী থেকে ওই বিদ্যালয়ে বর্ধিত সময়ের চাকুরিতে যোগদান করতে গেলে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক দিপেন্দ্র নাথ সহ কতিপয় শিক্ষক তাতে বাঁধা দেয়। প্রধান শিক্ষক যাতে তার অফিস কক্ষে বসতে না পারে সেজন্য তার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এদিকে সহকারী শিক্ষক দীপেন্দ্র একটি মহলের ছত্রছায়ায় প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয়ে আসতে বাধা সৃষ্টির পাশাপাশি ভাড়াটে সন্ত্রাসী বসিয়েছে। নির্ভরযোগ্য একটি সুত্র জানায়, প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে তালা খুলতে গেলেই তার উপর হামলা চালানো হবে। এ অবস্থায় তিনি ঠাকুরগাও থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। বিষয়টি খোদ জেলা প্রশাসক অবগত থাকলেও বিষয়টি সুরাহায় কেউ আন্তরিক নয়। এ অবস্থায় দীর্ঘ ৩ মাস ধরে বিদ্যালয়টিতে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে এলেও কেউ ক্লাস নেয়না। শিক্ষকরা গ্রুপিং লবিংয়ে ব্যস্ত। এদিকে সহকারী শিক্ষক দীপেন্দ্র নাথের নেতৃত্বে কতিপয় শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতায় সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর নিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। তারা স্বাক্ষর না করায় গত ৪ মাস ধরে বেতন ভাতা পাচ্ছেনা শিক্ষক কর্মচারীরা। এ অবস্থায় বেতন ভাতার দাবিতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীরা গত বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করে।
এ ব্যাপারে সহকারী প্রধান শিক্ষক দিপেন্দ্র নাথ জানান, প্রধান শিক্ষক গত ৩১ ডিসেম্বর অবসরে গেছেন। তাঁকে আমরা আর বিদ্যালয়ে চাইনা। তাই প্রধান শিক্ষিকার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে।
অপরদিকে প্রধান শিক্ষিকা মনোয়ারা চৌধুরী জানান, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বোর্ড আমার চাকুরির মেয়াদ বর্ধিত করেছে। উচ্চ আদালতও আমার পক্ষে রায় দিয়েছে। কিন্তু সহকারী শিক্ষক দিপেন্দ্র ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে বিদ্যালয়ে অস্থিরতা তৈরি করেছে। তিনি আরো জানান, নিয়ম অনুযায়ী আমার স্বাক্ষরে শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ছাড় দিবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অফিস সহকারী ওই মহলটির ইন্দনে আমার কাছে স্বাক্ষর নিতে না আসায় ব্যাংক থেকে কারো বেতন ছাড় করা হচ্ছে না।
বিদ্যালয়ের সভাপতি মোতালেব চৌধুরী জানান, দিপেন্দ্র নাথ ওই বিদ্যালয়ে সঘোষিত প্রধান শিক্ষক হতে চান। তাই তিনি একটি মহলের ছত্রছায়ায় বিদ্যালয়টি ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন।
এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফজলে আলম জানান, চাকুরি শেষে মেয়াদ বৃদ্ধির নিয়ম এখন আর প্রচলিত নেই। আগে দেয়া হতো। তিনি আরো জানান, শিক্ষা বোর্ড তাদের ক্ষমতা বলে কারো চাকুরির মেয়াদ বৃদ্ধি করতে পারে।
বিদ্যালয়ের অধ্যায়নরত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা অবিলম্বে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের চেয়ার নিয়ে টানাটানির শেষ দেখতে চান।