শেখ শাহ আলম, নড়াইল ঃ
নড়াইলের লোহাগড়া চলতি মৌসুমে ১২টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভাসহ উপজেলার রোপা আমনের লক্ষমাত্রা ছিলো ৯ হাজার ৭৮০ হেক্টর। লোহাগড়া কৃষি অফিস জানান কৃষকের পাট কাটতে দেরি ও আবহাওয়ার অনুকুলে না থাকার কারনে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়নাই। এ বছর ৮ হাজার ৭৫০ হেক্টর লক্ষমাত্রার চেয়ে (১ হাজার ৩০ হেক্টর) কম জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির রোপা আমন ধানের চাষাবাদে ফসল ভাল হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আমন ধান কাটা শুরুর মধ্য দিয়ে কৃষকদের আমন উৎসব শুরু হয়েছে।
লোহাগড়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়নে ৮০৫ হেক্টর, মল্লিক ইউনিয়নে ৩৮৫ হেক্টর, লক্ষীপাশা ইউনিয়নে ৬৩৫ হেক্টর, কাশিপুর ইউনিয়নে ৭১০ হেক্টর, নলদি ইউনিয়নে ২ হাজার ১৪০ হেক্টর, নওয়াগ্রাম ইউনিয়নে ৯৮০ হেক্টর,শালনগর ইউনিয়নে ৪৫৯হেক্টর, লাহুড়িয়া ইউনিয়নে ৯৩৫ হেক্টর, জয়পুর ইউনিয়নে ৩৮১ হেক্টর, লোহাগড়া ইউনিয়নে ১২০ হক্টর, ইতনা ইউনিয়নে ৪৮০ হের্ক্ট, কোটাকোল ইউনিয়নে ২৭০ হেক্টর, পৌরসভায় ৪৫০ হেক্টরসহ মোট ৮ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে উফশীজাত বিআর-২৩, ব্রি ধান-৩২, ব্রি ধান-৩৩, ব্রি ধান-৩৯, ব্রি ধান-৪১, ব্রি ধান-৪২, ব্রি ধান-৪৯, ব্রি ধান- ৫১-৫২, ব্রি ধান-৫৫, ব্রি ধান-৫৬, ব্রি ধান-৬২, ব্রি ধান- মোট ২৯ প্রজাতির ধানের মধ্যে হাই ব্রিড দুই প্রকার ১৬টি উপসি ,স্থানিয় ১১টি প্রজাতির মধ্যে মোট ৮৭৫০ হেক্টর, হাইব্রিড প্রজাতি উপসি এরাইজ গোল্ড, স্থানীয় প্রজাতি লালপাইজামসহ, বিভিন্ন, প্রজাতির ধান চলতি মৌসুমে চাষাবাদ করা হয়।
এ বিষয়ে দিঘলিয়া তালবাড়িয়ার কৃষক আক্তার মোল্যা বলেন “আমি ব্রি-৩৩ প্রজাতির ধান ৮ কানিতে চাষাবাদ করেছি। ফলন ভাল হয়েছে তবে ফসল ফলাতে যে খরচ হয়েছে বাজারজাত করলে সে খরচ উঠবেনা। আমরা ধান কাটা শুরু করেছি। আমার প্রতিবেশীরা ৫/৭ দিন পর ধান কাটবে।”একই ইউনিয়নের কুমড়ি গ্রামের কৃষক জিল্লু কাজী বলেন, “আমি ব্রি-৩৩ প্রজাতির ধান ৫ কানি জমিতে চাষ করেছি, খুব ভাল ফলন দেখা দিয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে ধান কাটা শুরু করব।” সব কৃষকরা বলেন, কৃষি অফিস আমাদের দিক নির্দেশনা দিলে আমরা আর বেশি ফসল ফলাতে পারতাম। আমরা সব সময় কৃষি অফিসের সহযোগিতা চাই।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সমোরেন বিশ^াস জানান, উপজেলা কৃষি অফিসের সার্বিক তদারকিতে যথাসময়ে সার পাওয়া, কীটনাশকের যথাযথ ব্যবহার ও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার বৃদ্ধির করেছি। কিন্তু প্রাকৃতিক আবহাওয়ার ও কৃষক সময়মত পাট না কাটতে পারার কারনে লক্ষমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়নি। তবে লক্ষমাত্রা কম হলেও সংশ্লিষ্ট সকলের সার্বিক সহযোগিতায় এবং আন্তরিকতায় লোহাগড়া আমন ধানের ফলন ভাল হয়েছে বলে জানান কৃষি কর্মকর্তা ।#