মহেশপুর (ঝিনাইদহ) উপজেলা সংবাদদাতা ঃ
চলতি অর্থ বছরে ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হতে আদিবাসীদের জন্য ১১লাখ ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।এই টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়ার জন্য মহেশপুরে রেজিষ্ট্রেশন বাতিল হয়ে যাওয়া আদিবাসী কল্যাণ বহুমুখি সমবায় সমিতির সভাপতি ভারত প্রবাসী মঙ্গলচন্দ্র ওরফে মোংলা (৪৮) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট আবেদন করেছেন।এর প্রতিবাদে গতকাল রোববার সকালে আদিবাসীরা উপজেলা পরিষদ চত্তরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। পরে মিছিল শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট একটি স্বারকলীপি প্রদান করেন।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, মহেশপুর উপজেলার ১৮টি গ্রামের ৪০০ আদিবাসী পরিবারের জন্য বরাদ্দকৃত ১১ লাখ ১০ হাজার টাকা দিয়ে ৪টি পাওয়ার ট্রিলার ক্রয়,১০০ ছাত্র-ছাত্রীর শিক্ষা উপকরণ ও শিক্ষা বৃত্তি বাবদ ব্যয় করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইতিপূর্বে প্রায় ২২ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়ে রেজিষ্ট্রেশন বাতিল হয়ে যাওয়া আদিবাসী কল্যাণ বহুমুখি সমবায় সমিতির সভাপতি মোংলা সঠিক ভাবে আদিবাসীদের মধ্যে বন্টন না করার অভিযোগ রয়েছে।
আদিবাসীদের অভিযোগ ও কার্যকম না থাকায় ২০১৬ সালের ৩ অক্টোবর আদিবাসী কল্যাণ বহুমুখি সমবায় সমিতির ৫৫৭ নন্বরের নিবন্ধনটি ১৮৬৪ নম্বর স্বারকে বাতিল করা হয়। মোংলার পরিবারের সকল সদস্য ভারতে থাকে,তিনি বছরের ৬মাস ভারতে পরিবারের কাছে থাকেন।
আদিবাসীদের জন্য ইউএনও অফিসে টাকা এসেছে শুনে তিনি ভারত থেকে চলে এসেছেন। বাতিল কৃত সমিতির নামে টাকা বরাদ্দ নিতে যাতে কোন ঝামেলা না হয় সে জন্য বেশ কয়েকজন তদবিরকারীও তার পক্ষে কাজ করছেন
অপর দিকে মহেশপুর আদিবাসী সমাজ কল্যাণ সমিতির সভাপতি শ্রী খগেন্দ্রনাথ সর্দার নিজেদের সংগঠনকে মহেশপুর উপজেলার একমাত্র বৈধ্য আদিবাসী সমিতি বলে দাবী করে সরকারী বরাদ্দের টাকা তাদের মাধ্যমে দেওয়ার আবেদন করেছেন। তিনি বলেন আদিবাসী কল্যাণ বহুমুখি সমবায় সমিতির সভাপতি মোংলা টাকা তছরুপ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ায় স্থানীয় আদিবাসীদের অভিযোগে উক্ত সমিতির রেজিষ্ট্রেশন বাতিল হয়ে যায়।
গোয়ালহুদা গ্রামের আদিবাসী রেনুবালা জানান,মঙ্গলচন্দ্র ওরফে মোংলা আমাদের এখানে থাকেন না । তিনি বেশ কিছুদিন ভারতে চলে গেছেন। তিনি আরো জানান, আদিবাসীদের জন্য টাকা এসেছে শুনে তিনি ভারত থেকে আবার চলে এসেছে টাকা হাতানোর জন্য। আমার নামে ১৯৯৯ সালে একটি জমি ডিসিয়ার দেওয়া হয় । মোংলা সেই জমি কি জালিয়াতি করে সামাদের কাছে বিক্রি করে টাকা নিয়ে ভারতে চলে গিয়ে ছিল।
আদিবাসী বিশুু খা জানান, মোংলার ভারতে থাকার কারণ তার ছেলে মেয়েরা সবাই ভারতে বসবাস করছে।
বাতিল হওয়া সমিতির সভাপতি মোংলা সাংবাদিকদের বলেন আমার সমিতি বাতিল হয়ে গেছে ,তারপরও আবেদন করেছি । এছাড়া নতুন করে আরো একটি সমিতি সমবায় থেকে রেজিষ্ট্রেশন নেওয়ার জন্য কার্যক্রম শুরু করেছি।তিনি ভারতের নাগরিক কিনা প্রশ্নে তিনি বলেন আমার স্ত্রী ও সন্তান আমার বাবার ভিটায় ভারতের রনঘাটে বসবাস করেন । আমি বছরে ৭-৮ মাস সেখানে থাকি ।
উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলম জানান, মহেশপুর উপজেলার আদিবাসী কল্যাণ বহুমুখি সমবায় সমিতির কার্যক্রম না থাকায় ২০১৬ সালের ৩ অক্টোবর ১৮৬৪ স্ম^ারকে নিবন্ধনটি বাতিল করা হয়েছে। তবে এখন তারা নতুন করে আবার সমিতির নিবন্ধন পাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন।