সাফ অনূর্ধ্ব—১৫ ফাইনালের আগে ভারতকে যতটা শক্তিশালী ধরে নিয়ে বাংলার ফুটবলাররা লড়াইয়ে নেমেছিল সেই শক্তি কাজে লাগাতে দেয়া হয়নি। মাঠে নামার সঙ্গে সঙ্গে ভারতকে চেপে ধরে জয় তুলে নিয়েছে। বাংলাদেশ ৩-০ গোলে হারিয়েছে ভারতকে। অলিখিত ফাইনাল হয়ে গেল। ড্রেস রিহার্সেল। ভারত এবং বাংলাদেশ আগেই ফাইনালের নিশ্চিত করে। ভারত বাংলাদেশের ফুটবল লড়াই। হতে পারে এটা ক্ষুদে ফুটবলারদের লড়াই। ভারত বাংলাদেশ ফুটবল লড়াই যে কোনো মাঠেই বাড়তি উত্তেজনা। কাল দুপুরে কমলাপুর স্টেডিয়ামে সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ ফুটবলেও সেই উত্তেজনা ছিল। ভারতকে উড়িয়ে দিয়ে উত্তেজনার পারদ কেড়ে নিয়েছে বাংলার নারী ফুটবলাররা। এই পয়েন্ট কোনো কাজে আসবে না তারপরও জয়ের জন্য বাংলার মেয়েরে শক্তি দেবে। কমলাপুরে রবিবার বেলা ২টায় ফাইনাল।
গত বছর তাজিকিস্তানে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ ফুটবলে বাংলাদেশ একবার ৩-১, আরেকবার ৪-০ গোলে হারিয়েছিল ভারতকে। এবার টানা তৃতীয়বার হারালেও পার্থক্যটা হচ্ছে এবার অনূর্ধ্ব-১৫ দল।
এবার সাফে বাংলাদেশ প্রথম খেলায় ৬-০ গোলে ভুটানকে, ৩-০ গোলে নেপালকে হারায়। ১২ গোলে করে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব—১৫ একমাত্র দল তিন খেলায় এখনও গোল হজম করেনি। কমলাপুর স্টেডিয়ামে কাল দুপুরে হাজার দেড়েক দর্শকের আওয়াজ স্টেডিয়ামের বাইরেও পৌঁছাল। বাসা-বাড়ির ছাদেও দর্শক জমল।
কোচ গোলাম রাব্বানী ছোটনের মেয়েরা প্রথম ধাক্কাতেই ভারতের উপর ঝাপিয়ে পড়ে। তবে বলতেই হয় বাংলাদেশের মেয়েরা যেভাবে গোল মিস করেছে তাতে একটা অশনি সংকেত রয়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে ফাইনালে সুযোগও বার বার আসবে না।
জিতলেও মেয়েরা গোলও মিস করেছে। ভারতের খেলোয়াড়দের ফাঁকি দিয়ে গোল মুখে ছোট বক্সে ঢুকে গোলকিপার মনিকা দেবীকে একা পেয়েও গোল করতে পারেনি।
নিয়মিত একাদশের আনুচিং মগিনি এবং মারজিয়াকে সাইড বেঞ্চে পাঠিয়ে বদলী দুই ফুটবলার ঋতুপর্ণা চাকমা এবং আক্রমণভাগের শামসুন নাহার এবং চোঁট পাওয়া তহুরার বদলে সাজেদা খাতুনকে একাদশে দেয়া হয়।
ভালো খেলেও গোল মিস করেছে সাজেদা খাতুন। সেই সবচেয়ে বেশি সুযোগ পেয়েও গোল পায়নি। ডিফেন্ডার শামসুন নাহার দুজনকে ডজ দিয়ে বল দিয়েছিলেন ঋতুপর্ণা চাকমাকে, সেও বাইরে মারে। শুরুতেই গোল মিসের মহড়া। সাজেদা নিজে ডজ করে বল নিয়ে ঢুকলেও গোল করতে পারেননি। সাজেদা অফসাইড ভেঙ্গে ঢুকে পড়লেও আবারও ব্যর্থ। ভারত পাত্তাই পাচ্ছে না। এমন আক্রমণের ঝড় বইয়ে দিল বাংলার কিশোরীরা। তারপরও গোলের মুখ দেখতে ৩২ মিনিট অপেক্ষা। সাজেদা খাতুনকে তুলে নিয়ে আনুচিং মগিনিকে মাঠে নামানো হয় ২৬ মিনিটে। ৩২ মিনিটে মনিকা চাকমরার কর্নার হতে গোল করেন আনুচিং মগিনি ১-০। এরপরও মগিনি ভারতের গোলকিপারকে একা পেয়েও ব্যর্থ। আরো একবার গোলকিপারকে একা পেয়েও মগিনি নিশানা খুঁজে পেলেন না। আফোসেসে ফেটে যায় দর্শক। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইম এক মিনিট দেন শ্রীলঙ্কান রেফারী লোসানী কাদাঙ্গনা। তখন পেনাল্টি পায় বাংলাদেশ। গোল করেন ডিফেন্ডার শামসুন নাহার ২-০।

ভারতের কোনো আক্রমণ চোখে পড়ল না। ভারত প্রথম খেলায় ভুটানকে ৩-০ এবং নেপালকে ১০-০ গোলে হারিয়ে আতংক ছড়িয়ে ছিল। কিন্তু বাংলার মেয়েদের বিপক্ষে সেই খেলা গেল কোথায়। প্রশ্নটা উঠলেও সেটাও তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলার মেয়েদের পারফরমান্স। ভারতের কোনো আক্রমণ বাংলার গোলকিপার মাহমুদা আক্তারকে এক বিন্দু কাঁপাতে পারেনি। তাকে বলই ধরতে হয়নি। ৫৩ মিনিটে বাংলার কিশোরীরা তৃতীয় গোল পায়। আনাই মগিনি বল নিয়ে ঢুকে মনিকা চাকমাকে দিলে সে দারুণ একটা ডজ দিয়ে শট করেন পোস্টে ৩-০।
রিপোর্ট »শুক্রবার, ২২ ডিসেম্বার , ২০১৭. সময়-১০:৩৭ pm | বাংলা- 8 Poush 1424